নবজাতকের টিকা শিশুর সুস্থতা ও সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বিভিন্ন সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। জন্মের পর থেকেই শিশুর শরীর নানা রোগের ঝুঁকিতে থাকে, যা সঠিক সময়ে টিকা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও বাংলাদেশ সরকারের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নবজাতকদের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী টিকা দেওয়া হয়। তবে, অনেক অভিভাবক টিকা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে সচেতন নন।
এই ব্লগে আমরা নবজাতকের টিকা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য, টিকার তালিকা, সময়সূচি, এবং এর উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব, যাতে আপনি আপনার শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
নবজাতকের টিকা কী?
নবজাতকের টিকা হলো বিশেষ ধরনের প্রতিষেধক যা শিশুর জন্মের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেওয়া হয়, যাতে তার শরীর বিভিন্ন সংক্রামক ও মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।
জন্মের পর থেকে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে, কিন্তু কিছু মারাত্মক সংক্রমণ যেমন যক্ষ্মা (টিবি), হেপাটাইটিস বি, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি এবং ধনুষ্টংকারের মতো রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শিশু জন্মের কতদিন পর টিকা দিতে হয় ?
নবজাতকের টিকা তার সুস্থতা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, শিশুর জন্মের প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রথম টিকা দেওয়া হয়।
এরপর নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী অন্যান্য টিকা গ্রহণ করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার এক্সপ্যান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন (EPI)-এর মাধ্যমে নবজাতক থেকে শুরু করে ১৫ মাস পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে টিকা প্রদান করে।
জন্মের প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে বিসিজি (BCG), হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B), এবং ওরাল পোলিও (OPV-0) টিকা দেওয়া হয়।
বিসিজি টিকা যক্ষ্মা (টিবি) রোগ প্রতিরোধে কাজ করে, হেপাটাইটিস বি টিকা লিভারের সংক্রমণ প্রতিরোধে, এবং ওরাল পোলিও টিকা পোলিও ভাইরাসজনিত পক্ষাঘাত রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এরপর, ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ, এবং ৯ মাস বয়সে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য টিকা প্রদান করা হয়। ৬, ১০, ও ১৪ সপ্তাহ বয়সে ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার (DTP), ইনঅ্যাকটিভেটেড পোলিও (IPV), হিব (Haemophilus influenzae type B), এবং পেন্টাভ্যালেন্ট (Pentavalent) টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া, ৯ মাস বয়সে হাম-রুবেলা (MR) টিকা দেওয়া হয়, যা হাম ও রুবেলা ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।
শিশুর পরবর্তী ডোজ ও টিকা সময়সূচি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সঠিক সময়ে টিকা না দিলে সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই, শিশুর জন্মের পরপরই তার টিকা কার্ড সংগ্রহ করুন এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকল টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করুন।
নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা
নবজাতকের টিকা তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জন্মের পর থেকেই শিশুর শরীর বিভিন্ন সংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে থাকে, যা প্রতিরোধের জন্য নির্ধারিত সময়ে টিকা নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সরকার এক্সপ্যান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন (EPI)-এর আওতায় নবজাতকদের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টিকা প্রদান করে। নিচে নবজাতকের প্রথম টিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তালিকা আকারে তুলে ধরা হলো:
টিকার নাম | কোন রোগ প্রতিরোধ করে? | কবে দেওয়া হয়? | কিভাবে দেওয়া হয়? | টিকার প্রতিক্রিয়া | বিশেষ তথ্য |
বিসিজি (BCG) | যক্ষ্মা (টিবি) | জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে | বাম হাতের উপরের অংশে চামড়ার নিচে ইনজেকশন | টিকা দেওয়ার স্থানে সাধারণত ছোট ফোড়া তৈরি হয়, যা কয়েক সপ্তাহ পর শুকিয়ে যায় | এই টিকা শিশুর আজীবন যক্ষ্মা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলে |
হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B) | হেপাটাইটিস বি ভাইরাসজনিত লিভারের সংক্রমণ | জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে | পায়ের উরুর অংশে ইনজেকশন | সাধারণত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না, তবে সামান্য জ্বর হতে পারে | এটি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসজনিত লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে |
ওরাল পোলিও (OPV-0) | পোলিও ভাইরাসজনিত পক্ষাঘাত রোগ | জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব (সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে) | শিশুর মুখে কয়েক ফোঁটা তরল আকারে প্রয়োগ | সাধারণত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না | পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত বয়সে (৬, ১০, ১৪ সপ্তাহ এবং ৯ মাস বয়সে) পোলিও টিকার অন্যান্য ডোজ নিতে হয় |
নবজাতকের এই টিকাগুলো শিশুর প্রাথমিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে এবং শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সাহায্য করে। তাই, নবজাতকের জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে গিয়ে প্রথম টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করুন।
নবজাতকের টিকার তালিকা
নবজাতকের টিকা শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। বাংলাদেশ সরকারের এক্সপ্যান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইমিউনাইজেশন (EPI) অনুযায়ী, নবজাতক থেকে ১৫ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের বিভিন্ন টিকা দেওয়া হয়। নিচে নবজাতকের টিকার তালিকা ও নির্ধারিত সময় অনুযায়ী টিকা গ্রহণের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো।
১. যক্ষ্মা (টিবি)
টিকার নাম: বিসিজি (BCG)
ডোজ: ০.০৫ এমএল
ডোজের সংখ্যা: ১
ডোজের মধ্যে বিরতি: নেই
টিকা শুরুর সঠিক সময়: জন্মের পর থেকে
টিকাদানের স্থান: বাম বাহুর উপরের অংশ
প্রয়োগ পথ: চামড়ার মধ্যে
২. ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি
টিকার নাম: পেন্টাভ্যালেন্ট টিকা (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব)
ডোজ: ০.৫ এমএল
ডোজের সংখ্যা: ৩
ডোজের মধ্যে বিরতি: ৪ সপ্তাহ
টিকা শুরুর সঠিক সময়: ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ
টিকাদানের স্থান: বাম উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশ
প্রয়োগ পথ: মাংসপেশীতে
৩. নিউমোকক্কালজনিত নিউমোনিয়া
টিকার নাম: পিসিভি (PCV)
ডোজ: ০.৫ এমএল
ডোজের সংখ্যা: ৩
ডোজের মধ্যে বিরতি: ৪/৮ সপ্তাহ
টিকা শুরুর সঠিক সময়: ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ
টিকাদানের স্থান: ডান উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশ
প্রয়োগ পথ: মাংসপেশীতে
৪. পোলিওমাইলাইটিস (পোলিও)
টিকার নাম: ওপিভি (OPV)
ডোজ: ২ ফোঁটা
ডোজের সংখ্যা: ৩
ডোজের মধ্যে বিরতি: ৪ সপ্তাহ
টিকা শুরুর সঠিক সময়: ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ
টিকাদানের স্থান: মুখে
প্রয়োগ পথ: মুখে
টিকার নাম: আইপিভি (IPV)
ডোজ: ০.৫ এমএল
ডোজের সংখ্যা: ১
ডোজের মধ্যে বিরতি: নেই
টিকা শুরুর সঠিক সময়: ১৪ সপ্তাহ
টিকাদানের স্থান: ডান উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশ
প্রয়োগ পথ: মাংসপেশীতে
৫. হাম ও রুবেলা
টিকার নাম: এমআর টিকা
ডোজ: ০.৫ এমএল
ডোজের সংখ্যা: ১
ডোজের মধ্যে বিরতি: নেই
টিকা শুরুর সঠিক সময়: ৯ মাস বয়স পূর্ণ হলে
টিকাদানের স্থান: ডান উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশ
প্রয়োগ পথ: চামড়ার নিচে
টিকার নাম: হামের টিকা (২য় ডোজ)
ডোজ: ০.৫ এমএল
ডোজের সংখ্যা: ১
ডোজের মধ্যে বিরতি: নেই
টিকা শুরুর সঠিক সময়: ১৫ মাস বয়স পূর্ণ হলে
টিকাদানের স্থান: বাম উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশ
প্রয়োগ পথ: চামড়ার নিচে
নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। প্রতিটি শিশুর যথাসময়ে টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
নবজাতকের টিকা কার্ড কী ?
নবজাতকের টিকা কার্ড হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যেখানে শিশুর জন্মের পর থেকে প্রয়োজনীয় সব টিকার তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এই কার্ডে শিশুর টিকার নাম, ডোজের সংখ্যা এবং টিকা নেওয়ার তারিখ উল্লেখ থাকে, যা তার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কেন নবজাতকের টিকা কার্ড গুরুত্বপূর্ণ?
নবজাতকের টিকা কার্ড তার সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সহায়ক। এটি শিশুকে বিভিন্ন সংক্রামক ও মারাত্মক রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
টিকা কার্ডে প্রতিটি টিকার নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ থাকে, যা অনুসরণ করা শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে সহায়তা করে। ভবিষ্যতে স্কুলে ভর্তি, ভ্রমণ বা চিকিৎসার জন্যও এই কার্ড প্রয়োজন হতে পারে।
টিকার সময়সূচি অনুসরণ কেন জরুরি?
শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী টিকা নেওয়া জরুরি। যদি কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে টিকা নেওয়া না হয়, তবে শিশুর সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই নবজাতকের জন্য সরকার নির্ধারিত সময়সূচি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কোথায় টিকা দেওয়া হয়?
বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে টিকা প্রদান করা হয়। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থান সম্পর্কে জানা যায়।
টিকা কার্ড হারিয়ে গেলে কী করবেন?
অনেক সময় শিশুর টিকা কার্ড হারিয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করা উচিত, কারণ সেখানে সাধারণত শিশুর টিকার রেকর্ড সংরক্ষিত থাকে। নতুন কার্ড সংগ্রহ করে পূর্ববর্তী টিকার তথ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
আরো পড়ুন : নবজাতকের নাভি শুকানোর উপায়
আরো পড়ুন : নবজাতকের জন্ডিস হলে মায়ের করনীয়
আরো পড়ুন : নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় বিস্তারিত জানুন
আরো পড়ুন : শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
আমাদের কথা :
শিশুর সুস্থ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে নবজাতকের টিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধুমাত্র সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে না, বরং শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সহায়তা করে। তবে, এখনো অনেক অভিভাবক টিকা সংক্রান্ত তথ্যের অভাবে সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় টিকা দিতে ব্যর্থ হন, যা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
আমরা বিশ্বাস করি, সঠিক তথ্য ও সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিটি শিশুর টিকাদান নিশ্চিত করা সম্ভব। এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নবজাতকের টিকার তালিকা, সময়সূচি, উপকারিতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সহজভাবে উপস্থাপন করেছি, যাতে অভিভাবকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
আমাদের লক্ষ্য হলো, সমাজের প্রতিটি শিশু যেন সময়মতো টিকা গ্রহণ করতে পারে এবং মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকে। সঠিক সময়ে টিকা নেওয়া শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য রক্ষার বিষয় নয়, এটি একটি সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনের পথও সুগম করে। আসুন, আমরা সবাই মিলে নবজাতকের টিকাদান নিশ্চিত করি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থতার ভিত্তি গড়ে তুলি।
FAQ:
নবজাতক শিশুকে কত দিনে টিকা দিতে হয়?
নবজাতকের প্রথম টিকা জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেওয়া হয়। এরপর ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ, ৯ মাস, এবং ১৫ মাস বয়সে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী অন্যান্য টিকা প্রদান করা হয়।
জন্মের পর শিশুদের কি টিকা দেওয়া হয়?
জন্মের পর প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ টিকা দেওয়া হয়:বিসিজি (BCG) – যক্ষ্মা প্রতিরোধে
হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B) – লিভারের সংক্রমণ প্রতিরোধে
ওরাল পোলিও (OPV-0) – পোলিও ভাইরাসজনিত পক্ষাঘাত রোগ প্রতিরোধে
জন্ম নিবন্ধন ছাড়া কি টিকা দেওয়া যাবে?
হ্যাঁ, জন্ম নিবন্ধন ছাড়াও নবজাতককে টিকা দেওয়া যাবে। তবে ভবিষ্যতে টিকার রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য শিশুর জন্ম নিবন্ধন করা গুরুত্বপূর্ণ।
বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে কি টিকা দেওয়া যাবে?
সাধারণ ঠান্ডা বা হালকা জ্বর থাকলে টিকা দেওয়া যেতে পারে। তবে শিশুর জ্বর বেশি হলে বা গুরুতর অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
নবজাতককে কখন টিকা দিতে হয়?
শিশুর জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম টিকা দেওয়া হয়। এরপর নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ, ৯ মাস এবং ১৫ মাস বয়সে অন্যান্য টিকা দেওয়া হয়। টিকার সময়সূচি মেনে চলা শিশুর সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টিটেনাস ইনজেকশন কত দিনের মধ্যে দিতে হয়?
টিটেনাস টিকা সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের দেওয়া হয়, যাতে নবজাতক প্রসবজনিত ধনুষ্টংকার থেকে সুরক্ষিত থাকে। গর্ভাবস্থার ২০ থেকে ৩২ সপ্তাহের মধ্যে প্রথম ডোজ এবং পরবর্তী ৪ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া উচিত। যদি মা আগে টিটেনাস টিকা নিয়ে থাকেন, তবে ডাক্তার পরবর্তী ডোজের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করবেন।
3 thoughts on “নবজাতকের টিকা : নবজাতকের টিকার তালিকা”